শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৬

অদ্ভুত ১০টি ভয়!

ভয় একটি মানসিক ক্রিয়া। নানান রকম ভয় দানা বাঁধে মানুষের মনে। কখনো কখনো সেই ভয় মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। তখন তা রূপ নেয় ব্যাধিতে। নানান রকম অদ্ভুত, উদ্ভট ভয়ের দুনিয়ায় বন্দী জীবন যাপন করছেন অনেকেই। তেমনই ১০টি ফোবিয়ার কথা জানব আজ।
Agyrophobia- এগিরোফোবিক হচ্ছে রাস্তা পারাপারের ভয়।
এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি সড়ক, মহাসড়ক পার হতে মারাত্মক ঝুঁকি অনুভব করে। স্বাভাবিকভাবেই নগর জীবনে এদের অবস্থা হয় খুবই শোচনীয়। এগিরোফোবিক্স একটি গ্রীক শব্দ। অর্থ হচ্ছে বাঁক বা ঘূর্নন, যেহেতু একজন ফোবিয়াগ্রস্থ ব্যাক্তি ট্রাফিককে ভয় করে এবং এড়ানোর চেষ্টা করে। এই ফোবিয়া বিভিন্নরকম হতে পারে। কেউ হয়তো চওড়া রাস্তাকে ভয় করে। আবার কেউ হয়ত সিঙ্গেল লেন রাস্তাকে ভয় করে, অথবা শুধু রাস্তার পাশে হাঁটতে বা পার হতেও ভয় লাগতে পারে তার।

Mageirocophobia- অদ্ভুত এই ফোবিয়ায় মানুষ রান্না করতে ভয়বোধ করে। এই শব্দটি গ্রীক শব্দ মাগেইরোকোস থেকে এসেছে যার মানে হল একজন রান্নায় দক্ষ ব্যাক্তি। এই ব্যাধি একজন মানুষের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের প্রবণতা তৈরি করতে পারে যদি সে একা বসবাস করে। এরা প্রচন্ডভাবে ভাল রাঁধুনিদেরও ভয় করতে পারে। রান্না সংক্রান্ত সকল কিছুই তারা এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করে। তবে অন্যান্য ফোবিয়ার মত এক্ষেত্রেও বিভিন্ন রোগীর মাঝে রোগের লক্ষণ এবং ধরণের পার্থক্য হয়।
Pediophobia- পুতলকে ভয়! এই ফোবিয়া আক্রান্ত ব্যাক্তি অযৌক্তিকভাবেই ভয় করে পুতলকে! ভয়টি ভৌতিক চিন্তা থেকে যাকে বলা হয়, “false representation of sentient beings”। এই পুতুল এমনকি রোবট হতে পারে, মেনিকুইন হতে পারে, হতে পারে ছোট্ট কোন বার্বি ডল। এই ফোবিয়া কিন্তু পেডিফোবিয়া বা পিডিয়াফোবিয়া নয় যা শিশুদের প্রতি ভীতির কারণে হয়ে থাকে। সিগমন্ড ফ্রয়েডের মতে এই ফোবিয়ায় একজন রোগী মনে করেন, পুতুলটি জীবন্ত হয়ে যাবে এবং তার ক্ষতি করবে।
Deipnophobia- ডিনারের সময় কথা বলতে ভয়। খাবার খাওয়ার সময় অনেকরকম অদ্ভুত আলোচনা হয়ত হয়। তবে কিছু মানুষ বাড়াবাড়িভাবে ভয় করে এই আলোচনাকে। তাই রাতের খাবার হয় তারা একা খায় অথবা খাবার টেবিলে চুপ করে থাকে।
Eisoptrophobia- আয়নাকে ভয়। এই ফোবিয়াগ্রস্থ মানুষ আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বকে ভয় করে। আরও স্পষ্ট করে বললে, তারা মনে করে আয়নার পেছনে আছে কোন ভৌতিক পৃথিবী। যদিও তারা জানে এই ভয় অযৈক্তিক, তবু তারা সবস্ময় উদ্বিগ্ন হয়ে থাকে। তারা আরও মনে করে, আয়না ভেঙ্গে ফেলা মন্দ ভাগ্যের পরিচয়। আবার এটাও মনে করে, আয়নার দিকে তাকালে আয়নার পেছনের ভয়াল ভৌতিক পৃথিবী তাকে টেনে নেবে ভেতরে। অনেকসময় আয়নায় তারা নিজের পেছনে মানুষের ছায়া বা মূর্তি দেখতে পায়।
Demonophobia- পিশাচের ভয়। এক্ষেত্রে মানুষ মনে করে পৃথিবীতে ভৌতিক অতিপ্রাকৃত চরিত্র যেমন ভূত, পিশাচ ঘুরে বেড়ায় এবং তারা যেকোন সময় তার ক্ষতি করতে পারে। এই ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেও বুঝতে পারে যে তার ভয় অযৌক্তিক। তবু সে ভুতের সিনেমা দেখা এমনকি বিকৃত মুখভঙ্গি বা অন্ধকার ঘরকে ভয় করে।
Pentheraphobia- শ্বাশুড়িকে ভয়! সকল ফোবিয়ার মধ্যে এটাই সম্ভবত সবচেয়ে সাধারণ। সব বিবাহিত মানুষ নারী হোক বা পুরুষ একবার হলেও এই ভয়ের মধ্য দিয়ে যায়! পশ্চিমা বিশ্বে এই ধরণের ফোবিয়া বেশী দেখা যায়।
Arachibutyrophobia- মুখের ভেতরে উপরের মাড়িতে পিনাট বাটার লেগে যাওয়ার ভয়। ভয় যে কত অদ্ভুত হয়! তবে এই ডিসর্ডার সচরাচর দেখা যায় না। ভয়ের সমাধানটিও সহজ। পিনাট বাটার না কিনলেই হল।
Cathisophobia- বসার ভয়। এই ব্যাধি অর্শ্বরোগের কারণে হতে পারে। তবে কখনো কখনো এটি ছোটবেলায় শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার কারণেও হতে পারে। হয়ত, স্কুলে শাস্তি হিসেবে ধারালো কিছুর উপর বসতে দেওয়া হত। অথবা সামনে অপছন্দের ব্যাক্তির বসে থাকার কারণেও একজন ফোবিয়াগ্রস্থ ব্যক্তি বসতে ভয় পেতে পারেন।
Automatonophobia- কথা বলতে পারে এমন ডামি (Ventriloquist’s Dummy) পুতুলকে ভয়। অনেক সার্কাস বা নাটকের শো তে এমন পুতুল আনা হয়, যার ভেতরে হাত ঢুকিয়ে পুতুলের মুখ নাড়িয়ে দেখানো হয় যে সে কথা বলছে। এই ধরণের পুতুলের ভয়ই automatonophobia।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন