শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৬

মনোঃসংযোগ ধরে রাখার ১৫ টি উপায়

আমরা প্রতিদিন বিক্ষিপ্তভাবে নানা কাজ করি। আর এ কাজগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী সুবিন্যস্তভাবে করা হয় না। এক্ষেত্রে সঠিকভাবে মনোঃসংযোগ করতে পারলে তা দিনের কার্যক্রম ঠিকভাবে করতে সহায়ক হবে। এ লেখায় দেওয়া হলো কোনো একটি নির্দিষ্ট কাজে মনোযোগী হওয়ার কিছু উপায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।
১. নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন
শারীরিক অনুশীলন শুধু শরীরই ভালো করে না এটি মনের স্বাস্থ্যও ঠিক করে। কোনো একটি বিষয়ে মনোযোগী হওয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য শারীরিক অনুশীলনের গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শারীরিক অনুশীলন মস্তিষ্কের উন্নতি করে এবং মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করে।




২. ধ্যান
মস্তিষ্কের কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য ধ্যান হতে পারে একটি দারুণ উপায়। এজন্য আপনার একটি ভালো সময় বেছে নিতে হবে, যে সময়ে আপনি সচেতন ও জেগে থাকবেন। এরপর সোজা হয়ে বসে নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে লক্ষ্য রাখবেন এবং তা দেহে কীভাবে কাজ করছে তা অনুভব করবেন। যখনই আপনি বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবেন তখনই এ কাজটি করবেন।
৩. একসঙ্গে একাধিক কাজ বাদ দিন
বিভিন্ন গবেষণাতে দেখা গেছে, একসঙ্গে একাধিক কাজ বা মাল্টিটাস্কিং আপনার উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়। এর মূল কারণ মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি যেখানে হয় সেখানেই একাধিক বিষয় একসঙ্গে চালানো যায় না। ডানা ফাউন্ডেশনের বই ‘ব্রেইন ফিটনেস’-এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, মাল্টিটাস্কিং তথ্য-প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে ‘বটলনেক’ তৈরি করে। এতে বাস্তবে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং নতুন বিষয় শেখার ব্যবস্থায় বাধা দেয়। এ কারণে হাতের কাজটি শেষ করাতেই সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।
৪. কর্মতালিকা করুন
আপনার সারা দিনে কোন কোন কাজ করতে হবে তার একটি তালিকা করুন। সময় বাঁচাতে হলে কোন কোন খাতে সময় ব্যয় করছেন তার আসল হিসেবটি বের করুন। প্রতি ঘণ্টা কোথায় কী কী কাজে যাচ্ছে তার তালিকা করুন। সেখান থেকে কোন কাজগুলোতে অতিরিক্ত সময় দিচ্ছেন তা বোঝার চেষ্টা করুন।
৫. সামান্য ক্যাফেইন গ্রহণ করুন
চা কিংবা কফির মাধ্যমে দেহে ক্যাফেইন গ্রহণ করা যায়। আপনি যদি সামান্য ক্যাফেইন গ্রহণ করেন তাহলে তা মনোযোগ বাড়াতে সহায়তা করে। তাই সামান্য চা বা কফি পান করা যেতে পারে।
৬. বিরতি নিন
একটানা কাজ করতে থাকলে তা কোনো কাজই সফলভাবে শেষ করতে নিরুৎসাহিত করে। এ কারণে নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিরতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
৭. কাজের সময় কাজ
কাজের সময় শুধুই কাজ করুন। ব্যক্তিগত সময়ে শুধুই ব্যক্তিগত কাজ করুন। উভয় বিষয়ের মিশ্রণ আপনার জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। কাজের সময় ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনা বাদ দিন। কিছু সময় শুধুই কাজের জন্য বরাদ্দ রাখুন।
৮. মস্তিষ্কের অনুশীলন করুন
কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য মস্তিষ্ককে প্রশিক্ষণ দিন। এজন্য আপনার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যদি কোনো একটি দিকে মনোযোগী না হয়ে হাজার বিষয়ে মনোযোগ দিতে চান তাহলে তা কোনো কাজে আসবে না।
৯. নিরব স্থান বাছুন
আশপাশের শব্দ আপনাকে যদি বিরক্ত করে তাহলে এমন একটি স্থান খুঁজে বের করুন যেখানে কোনো বিরক্তিকর শব্দ হয় না। এ স্থানে আপনি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা শুরু করুন। এতে আপনার কাজের গতি বাড়বে।
১০. দূরের জিনিসে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন
আমরা অনেকেই দিনের অধিকাংশ সময় কম্পিউটার স্ক্রিন, মনিটর, স্মার্টফোন কিংবা ট্যাবের দিকে তাকিয়ে ব্যয় করি। এতে আমাদের মন আগের তুলনায় অনেক বিক্ষিপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ সমস্যা কাটাতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও কিছুটা দূরের কোনো বস্তুর দিকে মনোযোগী হন।
১১. ভালোভাবে ঘুমান
রাতে যদি ভালোভাবে ঘুম না হয় তাহলে দিনের কাজে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। তাই রাতে ভালোভাবে ঘুমানোর দিকে মনোযোগী হোন।
১২. অফলাইনে কাজ করুন
অনলাইনের কারণে আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে ক্রমাগত ব্যাঘাত ঘটে। আর এ ব্যাঘাত থেকে বাঁচতে অফলাইনে থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করুন। এতে কাজের গতি ও মনোযোগ যেমন বাড়বে তেমন কাজের মানও বাড়বে।
১৩. আদর্শ পড়ার স্থান ঠিক করুন
মনোযোগের সঙ্গে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজন আদর্শ স্থান। ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন আপনার পড়ার মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। আর তাই পড়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান ঠিক করুন। সে স্থানে বসে নিয়মিত মনোযোগের সঙ্গে পড়াশোনা করার চেষ্টা করুন।
১৪. একঘেয়েমিকে উপভোগ করুন
কাজ করতে গিয়ে যদি আপনি ক্লান্ত হয়ে যান তাহলে একঘেয়েমিতে আক্রান্ত হতে পারেন। আর এ একঘেয়েমিও মাঝে মাঝে আপনার কাজে লাগতে পারে। যেমন ক্লান্ত হওয়ার পর একঘেয়েমিতে আক্রান্ত হয়ে অন্য কোনো কাজ না করে তা কিছুক্ষণ উপভোগ করুন।
১৫. সময় ধরে কাজ করুন
প্রত্যেকটি কাজ সমাধান করতেই একটি নির্দিষ্ট সময় লাগবে। আর এ সময়টি যদি আপনি আগে থেকে ঠিক করে রাখেন তাহলে তা কাজটি মনোযোগ দিয়ে করতে সহায়তা করবে। এজন্য করতেই হবে এমন কাজগুলো পৃথকভাবে তালিকাবদ্ধ করুন। এবার এই কাজগুলো প্রতিদিন নিয়মমাফিক করে ফেলার পরিকল্পনা করে ফেলুন। চেষ্টা করবেন পুরো ঝরঝরে মন নিয়ে কাজগুলো করতে। এর পাশাপাশি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন কাজের তালিকা করে সেগুলো করার সময় বেঁধে নিন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন