বুধবার, ২ মার্চ, ২০১৬

ওয়েবসাইট এর ভিজিটর বাড়ানোর সেরা ১০ টি উপায়

আপনি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। এখন আপনার প্রতিষ্ঠানের অনেক নিয়মিত কাস্টমার প্রয়োজন হবে যাতে করে আপনি খুব দ্রুত ব্যাবসায় সফলতা অর্জন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে টার্গেটেড কাস্টমারদের কাছে সঠিক ধারণা দেয়াটা অনেক জরুরি। এটি আপনার প্রতিষ্ঠানে ভিজিটর বাড়াতে এবং ব্যাবসার প্রচারে অনেক গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কাজেই আপনাকে পণ্যের গুণগত মানের উপর ভিত্তি করে আকর্ষণীয় পোস্ট তৈরি করতে হবে যাতে করে টার্গেটেড কাস্টমারদের কাছে পণ্য সম্পর্কে বেশ আগ্রহ তৈরি করতে পারেন। আপনার পোস্টগুলোতে যত ভালভাবে প্রোডাক্টগুলোর গুণগত মানের কথা উপস্থাপন করতে পারবেন তত বেশী আপনার পণ্যের নিয়মিত কাস্টমার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনার প্রোডাক্টগুলোকে অতি দ্রুত গ্রাহকদের কাছে প্রচার করতে ভাল মানের পেইজ পোস্টের কোনো বিকল্প নেই। আসুন জেনে নিই কিভাবে অনেক ভাল মানের পেজ পোস্ট তৈরি করা যায় এবং এই পোস্টগুলোর মাধ্যমে কিভাবে আপনার প্রতিষ্ঠানে বা ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়াতে পারেন।
১. ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর জন্য পোস্টের লিংকগুলো ব্যাবহার করুন :
ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর পাওয়ার জন্য আপনার পোস্টের লিংকগুলো অনেক কার্যকরী ভুমিকা রাখবে কেননা পোস্টটি পড়ে অনেকের কাছেই আপনার সাইটে ঘুরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করার সম্ভাবনা থাকে। পেইজের শেয়ারিং টুলে সাইটের URLটি যোগ করে নিন কারণ সাইটের টাইটেল, বিবরণ, ইমেজ ইত্যাদি অনেককিছুই আপনার URL থেকে পাওয়া যাবে, কাজেই আপনার পোস্টে কোন্ ধরণের টেক্সট এবং ইমেজ ব্যাবহার করবেন সেটা আপনার প্রোডাক্টের উপর ভিত্তি করে আপনাকেই নির্ধারণ করতে হবে। ইউজারদের কাছে এই ধরণের ভাল মানের টেক্সট এবং ইমেজের গুরুত্ত্ব অনেক বেশী, কারণ তথ্যবহুল এবং আকর্ষণীয় টেক্সট বা ছবির মাধ্যমেই তারা আপনার প্রোডাক্টের প্রতি আগ্রহ অনুভব করবে এবং সাধারণত ইউজাররাই এই ধরণের ইমেজগুলোর গুরুত্ত্ব অনেকাংশে বাড়িয়ে তুলে, তাই অবশ্যই ভাল মানের টেক্সট, ইমেজ ব্যাবহারের ক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকতে হবে যাতে সুনিশ্চতভাবে আপনার পোস্টের ইমেজগুলো অতি দ্রুত টার্গেটেড কাস্টমারদের কাছে প্রচার পায়।
২. পোস্ট রিলেটেড ইমেজ এবং ভিডিও ব্যাবহার করুন  :
আপনার প্রোডাক্ট বা পণ্যের রিলেটেড ভাল মানের ছবি বা আপনার পণ্য ব্যাবহার করে লাভবান হয়েছেন এমন কাস্টমারদের ছবি শেয়ার করার চেষ্টা করুন যাতে অন্যেরাও আপনার পণ্য ব্যাবহারের ক্ষেত্রে আগ্রহ অনুভব করে। বড় মাপের মিডিয়া সাইটগুলোও এই ধরণের ভাল মানের ছবি এবং ভিডিও গুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আপনার পোস্টের ইমেজ এবং ভিডিও গুলো প্রচার করে থাকে। পোস্টটি যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত কিন্তু তথ্যবহুল করে লেখার চেষ্টা করুন, কারণ ইউজাররা তুলনামূলকভাবে ছোট এবং সংক্ষিপ্ত পোস্টগুলো পড়তে বেশী পছন্দ করে।
৩. ইউজার/কাস্টমারদের মতামতের উপর গুরুত্ত্ব দিন  :
আপনার অডিয়্যান্সদের জন্য আপনার পণ্যের গুণগত মান বিবেচনার সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় মতামত দেয়ার বা মন্তব্য করার সুব্যাবস্থা রাখুন এবং কাস্টমারদের আপনার পণ্যের প্রতি বিশ্বস্ততা বাড়াতে তাদের ধারণাগুলোর যথাযত গুরুত্ত্ব দেয়ার চেষ্টা করুন। ব্যাবসায় সফলতার জন্য এটি টার্গেটেড কাস্টমারদের আপনার প্রোডাক্টের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করতে বা তাদেরকে আগ্রহী করে তুলতে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।
উদাহরণস্বরুপ আমরা  ক্রিয়েটিভ আইটি (http://www.creativeit-ltd.com/) এর কথা বিবেচনা করতে পারি। এটি একটি আই টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যেটি প্রায় অনেকদিন থেকে আই টি সেকশানের বিভিন্ন বিষয়ের উপর অনেক গুরুত্ত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছে এবং তাদের ফেসবুক পেজ বা গ্রুপে তাদের অডিয়্যান্সদের জন্য প্রয়োজনীয় মতামতের সুব্যাবস্থা রেখেছে। এতে করে ইউজাররা তাদের দরকারী অনেক প্রশ্নের উত্তর খুব সহজে পেয়ে যাচ্ছে বা তারাও তাদের গুরুত্ত্বপূর্ণ মতামত জানাতে পারছে।
                                                                                                  
৪. আকর্ষণীয় ডিস্কাউন্ট এবং প্রোমোশান এর ব্যাবস্থা করুন :
অনলাইনে বিক্রি বাড়াতে বা টার্গেটেড কাস্টমারদের আগ্রহী করে তোলার জন্য নিজের পণ্যের স্পেশাল কিছু অফার দেয়ার ব্যাবস্থা করুন। আপনার প্রোডাক্টের সাথে সম্পৃক্ত পেইজের লিংকগুলো আপনার ওয়েবসাইটে যুক্ত করুন।
যেমন ক্রিয়েটিভ আই টি কোম্পানি সবসময় তাদের পোস্টগুলোর মাধ্যমে স্পেশাল কিছু অফার দেয়ার ব্যাবস্থা রাখে যা তাদের ব্যাবসায়ীক সফলতার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হয়। যেমন সম্প্রতি তারা গ্রাফিক্স ডিজাইনে ১০০ জন নারীর জন্য ফ্রী স্কলারশীপের বিশাল অফার চালু করে। এছাড়াও তাদের পোস্টগুলোতে সবসময় অনেক বড় বড় স্পেশাল অফারের ব্যবস্থা রাখা হয়।
৫. আকর্ষণীয় তথ্য প্রদান করুন   :
আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে যত বেশী আকর্ষণীয় তথ্য দিতে পারবেন তত বেশি কাস্টমারদের আপনার পণ্যের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে পারবেন। কাজেই আপনার পেইজের সাথে যুক্ত আছেন এমন কাস্টমারদের জন্য বা আপনার পণ্যের গ্রাহক সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আকর্ষণীয় তথ্য প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে যথাসম্ভব আকৃষ্ট করার চেষ্টা করুন। আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে আকর্ষণীয় তথ্য, কন্টেন্ট বা ইভেন্টসের গুরুত্ত্বপূর্ণ তথ্য দেয়ার মাধ্যমেও গ্রাহকদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করুন।
৬. সময়ের প্রতি খেয়াল রাখুন :
আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কোন সময়ে আপনার ক্রেতারা আপনার পণ্যের প্রতি বেশী আগ্রহ প্রকাশ করছে এবং কখন আপনার পোস্টগুলোর প্রতি তাদের নজর পড়ছে, সেই অনুযায়ী আপনি পোস্ট দিতে পারেন বা পোস্টগুলোর রিপ্লাই দিতে পারেন যাতে আপনার পোস্টগুলো অতি দ্রুত টার্গেটেড কাস্টমারদের কাছে দৃষ্টিগোচর হয়। যেমন বর্তমান কোনো উপলক্ষে বা ছুটির দিনগুলোতে আপনার পোস্টগুলোতে বেশি পরিমাণ রিপ্লাই পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। আপনাকেও অবশ্যই যথাসময়ে তাদের মন্তব্যগুলোতে রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে কারন যতদ্রুত আপনি তাদের মন্তব্যগুলোর প্রতি নজর রেখে ভাল রিপ্লাই দিতে পারবেন তত দ্রুত আপনার প্রোডাক্টের প্রতি আগ্রহী ক্রেতা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
টিপস : আপনার আগাম কোনো প্রোডাক্টের বিক্রির সম্ভাবনা বাড়াতে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে প্রোডাক্টটি সম্পর্কে সবাইকে কিছুটা ধারণা দেয়ার জন্য নিয়মিত ছোটখাটো পোস্ট দেয়ার চেষ্টা করুন যাতে সবাই আপনার আপকামিং প্রোডাক্টির জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে।
৭. পরিকল্পনামাপিক ক্যালেন্ডার তৈরি করুন  :
আপনার ফ্যানদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি মাসে কোন্ প্রোডাক্টের উপর আলোচনা বা পর্যালোচনা হবে তার একটি সুনির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার তৈরি করা। এটি শুধুমাত্র আপনার নিয়মিত পোস্টগুলোর জন্য সহায়ক হবেনা, বরং আপনাকে ভাল পরিকল্পনা তৈরি করতে, টার্গেটেড কাস্টমারদের আগ্রহী করতে অনেকখানি সাহায্য করবে এবং আপনার ব্যাবসার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্ত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা নিউজ পেতে সাহায্য করবে। আপনার কাজের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বা আপনার প্রোডাক্টের কাস্টমার পেতে সাহায্য করবে এরকম কয়েকটি গ্রুপের সাথে সংশ্লিষ্টতা রাখার চেষ্টা করুন।
৮. পোস্ট দেয়ার সময়সূচী নির্ধারণ করুন :
সময় নির্ধারণ করে আপনার পোস্টগুলো শেয়ার করার ব্যাবস্থা করুন। বিশেষ করে যখন আপনার প্রোডাক্টের ফ্যানরা অনলাইনে অবস্থান করবে তখন আপনার পোস্টগুলো শেয়ার করার চেষ্টা করুন যাতে পোষ্টগুলো অতিদ্রুত তাদের কাছে দৃষ্টিগোচর হয়। আপনার পোস্টটি শেয়ার করার পরে আপনি সহজেই খুজে নিতে পারবেন আপনার কোন কাস্টমাররা  অনলাইনে আছে এবং আপনার পেইজে অবস্থান করছে । আপনি চাইলে আপনার টপ পেইজের এডিট পেইজে গিয়ে এক্টিভিটি লগ সিলেক্ট করে আপনার শেয়ারকৃত পোস্টটি নির্ধারণ করে নিতে পারবেন।
৯. আপনার পোস্টগুলোকে টার্গেটেড করুন  :
আপনার পোস্টগুলো যদি বিশেষ কোনো গ্রুপের সদস্যদের উদ্দেশ্যে হয় তাহলে পেইজের শেয়ারিং টুলের নিচের বাম দিকে থাকা টার্গেট      আইকনে ক্লিক করে এড টার্গেটিং সিলেক্ট করে পোস্টটি টার্গেটেড করে নিতে পারেন। স্ত্রী/পুরুষ, রিলেসানশীপ স্ট্যাটাস, এডুকেশানাল স্ট্যাটাস, আগ্রহী ব্যাক্তি, বয়স, লোকেশান, ভাষা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা সাপেক্ষে আপনার পোস্টটি টার্গেটেড করতে পারেন।
১০. আপনার পোস্টের পারফরম্যান্স এর প্রতি নজর রাখুন  :
আপনার কাস্টমারদের সাথে পোস্টগুলোর সম্পৃক্ততা বাড়াতে বা পোস্টগুলোর প্রচার বাড়ানোর জন্য কি করা প্রয়োজন তা বুঝার জন্য নিয়মিত পেইজের সাথে এক্টিভ থাকার চেষ্টা করুন। পেইজের সাথে সম্পৃক্ত থাকার মাধ্যমে কাস্টমারদের চাহিদা সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট ভাল ধারণা তৈরি হবে এবং তারা কোন ধরণের কন্টেন্ট এর প্রতি বেশি আগ্রহী তা বুঝতে সাহায্য করবে। কাজেই পেইজের সাথে নিয়মিত সম্পৃক্ত থাকা আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ণ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন